কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলায় সরকারী কর্মকর্তা অফিস করেন বাইসাইকেলে!
এনামুল হক রাসেল এনামুল হক রাসেল
সম্পাদক, দ্য বিডি রিপোর্ট ২৪ ডটকম


মিরপুর সংবাদদাতা: বর্তমান যুগে ভাবনার অতীত হলেও এমন একজন সরকারী কর্মকর্তার সন্ধান পাওয়া গেছে, যিনি বাইসাইকেলে চড়ে অফিস করেন। তিনি একটি উপজেলার দপ্তর প্রধান। শুধু তাই নয় ওই কর্মকর্তা ২১২ বর্গকিলোমিটার আয়োতনের উপজেলার এক প্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্ত পর্যন্ত বিরামহীন বাইসাইকেলে চষে বেড়ান। তিনি যে বাইসাইকলেটি চড়েন সেটিও জং ধরা। কতদিন চেইনে তেল-মবিল দেয়া হয়নি তার ইয়াত্তা নেই। বেল ও ব্রেকও ঠিকমতো কাজ করে না। তারপরও প্রতিদিন তিনি গড়ে কমপক্ষে ৫০ কিলোমিটার এলাকা বাইসাইকেল চালান। শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি থাকা সত্বেও তিনি বেশিরভাগ সপ্তাহে ছুটি না কাটিয়ে তাঁর কর্মরত এলাকা পরিদর্শন করেই সময় কাটান। যার সততাও প্রশ্নবিদ্ধ নয়।
ব্যাতিক্রম স্বভাবের ওই কর্মকর্তার নাম আব্দুস সাত্তার (৫৫)। তিনি কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার তুলা উন্নয়ন বোর্ডের কটন ইউনিট অফিসার।২০০৬ সালে তিনি এ উপজেলায় যোগদান করেন। তিনি এ উপজেলায় যোগদানের পরপরই তাঁর দপ্তরের জন্য একটি মোটর সাইকেল বরাদ্দের আদেশ হয়েছিল। কিন্তু আদেশে মোটর সাইকেলটি ব্যবহারের জন্য তেলের বরাদ্দ না থাকায় অফিসে তাঁর ব্যবহারের জন্য মোটর সাইকেলটি আর তিনি উত্তোলন করেননি। কারন তিনি মনে করেন তেলের বরাদ্দ ছাড়া অফিসিয়াল কাজে মোটর সাইকেল ব্যবহার করলে হয় ব্যাক্তিগতভাবে বেতনের টাকা থেকে নইলে অসাধু উপায়ে তাঁকে তেলের বিল পরিশোধ করতে হবে।
অতি সাধারন বেশভুষায় চলাচলে অভ্যস্ত আব্দুস সাত্তার কর্মপাগল একজন কর্মকর্তা।একযুগ ধরে তিনি এ উপজেলায় কর্মরত থাকলেও তাঁর সততা নিয়ে কাউকে অঙ্গুলী উত্তোলনের খবর মেলেনি। উপজেলাটিতে কয়েকযুগ ধরে বিষবৃক্ষ তামাক চাষে একচ্ছত্র আধিপত্য থাকায় অন্যান্য ফসলের উল্লেখযোগ্য আবাদ হয়না। সেখানে তুলার আবাদ ভাবাই যায় না। তাসত্বেও আব্দুস সাত্তার ২০০৬ সালে যখন এ উপজেলায় যোগদান করেন, তখন এ উপজেলার অবহেলিত সবচেয়ে অ-জনপ্রিয় তুৃলার আবাদ হতো মাত্র একশত বিঘা জমিতে। আব্দুস সাত্তারের অক্লান্ত পরিশ্রমে বর্তমানে এ উপজেলায় এক হাজার বিঘা জমিতে তুলার চাষ হচ্ছে। বলা যায়, মিরপুর উপজেলায় তুলা চাষের আবাদ ও জনপ্রিয়তা বাড়ছে।
উপজেলা পরিষদের প্যাটার্ণ অনুযায়ী তুলা উন্নয়ন বোর্ড মিরপুর অফিসের জন্য কটন ইউনিট অফিসার ছাড়াও সহকারী কটন অফিসার,ফিল্ড সুপার ভাইজার, ষ্টোর কাম ফিল্ডম্যান ও একজন এমএলএস থাকার কথা থাকলেও শুধু কটন ইউনিট অফিসার ছাড়া বাকী পদগুলো শুণ্য রয়েছে। মোটর সাইকেলের তেলের বরাদ্দ ও অফিসের লোকবল সংকট নিয়েও সংশ্লিষ্ট দপ্তরের প্রতি তার ক্ষোভ বা আক্ষেপও তাঁর নেই।
এ বিষয়ে আব্দুস সাত্তারের সাথে আলাপ হলে তিনি জানান, দেশের প্রায় তুলা উন্নয়ন অফিসের জন্য মোটর সাইকেল বরাদ্দ থাকলেও অদ্যবধি তেলের বরাদ্দ হয়নি। প্রায় অফিসেই বেতনের টাকা দিয়েই তাঁর কলিগরা মোটর সাইকেলের তেলের খরচ বহন করেন।আব্দুস সাত্তার ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁও উপজেলার চরালঘী ইউনিয়নের চরমসলদী গ্রামের মৃত আব্দুল মজিদ সরকারের ছেলে।
- আজ মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস
- দৌলতপুরে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট ও শহীদ শেখ রাসেল স্মৃতি ফাউন্ডেশনের আয়োজনে শীতবস্ত্র বিতরণ
- কুষ্টিয়ায় ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রধান শিক্ষককে হত্যার হুমকি
- কুষ্টিয়ায় গভীর নলকূপের তিনটি ট্রান্সমিটার চুরি
- কুষ্টিয়ায় ভেজাল কসমেটিকস তৈরীর কারখানা আবিষ্কার