কুষ্টিয়ায় নার্সের বস্তাবন্দী লাশ: বাদির দেয়া তথ্য পুলিশ আমলে না নেয়ার অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন

এনামুল হক রাসেল এনামুল হক রাসেল

সম্পাদক, দ্য বিডি রিপোর্ট ২৪ ডটকম

প্রকাশিত: ৩:৪৮ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২৫, ২০১৯
Spread the love

নিজস্ব প্রতিনিধি/ ২৫আগষ্ট,২০১৯: কুষ্টিয়ায় বিলকিস আক্তার(৪০) নামের এক ক্লিনিক নার্সের বস্তাবন্দী লাশ উদ্ধারের পর জড়িত সন্দেহভাজনদের নাম উল্লেখসহ এজাহার দিলেও তা আমলে না নিয়ে নিজেদের পছন্দ মতো মাত্র একজন আসামীর নামে মামলা নং ০৯/১৩৪/২০১৯ দ:বি: ৩০২/২০১/৩৪ ধারায় রেকর্ডের অভিযোগ উঠেছে কুমারখালী থানা পুলিশের বিরুদ্ধে। এমন অভিযোগ তুলে এবং প্রকৃত জড়িতদের গ্রেফতার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে নিহতের পরিবার। রবিবার দুপুর ১২টায় কুষ্টিয়া প্রেসক্লাব মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এই সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ পাঠ করে শোনান মামলার বাদি নিহতের ভাই পারভেজ হোসেন এবং স্বামী রফিকুল ইসলাম। সেখানে উপস্থিত ছিলেন, নিহতের মা মর্জিনা খাতুন(৯০), কণ্যা কুয়াসা ইয়াসমিন(১৭)সহ নিহতের লাশ প্রত্যক্ষদর্শীরা।

পরিবারের অভিযোগ, একজন সুঠামদেহী সুস্থ্য স্বাভাবিক মানুষকে নৃশংস ভাবে একাধিক ব্যক্তি যৌন নির্যাতন শেষে হত্যা, বস্তাবন্দি এবং তা দীর্ঘপথ পাড়ি দিয়ে খালের পানিতে ভাসিয়ে দেয়া কোনভাবেই একক কোন ব্যক্তির দ্বারা সম্ভব নয়। তাছাড়া হত্যাকান্ডের পূর্ববর্তী এবং পরবর্তী গুরুত্বপূর্ন তথ্য উপাত্তের ভিত্তিতে একাধিক ব্যক্তির জড়িত থাকার যোগসূত্র থাকার পরও পুলিশ নিজের মতো করে কেবলমাত্র জসিম নামের একজনকে আসামী করে মামলা রেকর্ড এবং তাকে গ্রেফতার করে আদালতে সৌপর্দ করেন। অথচ মামলার এজাহারে জড়িত সন্দেহে একাধিক ব্যক্তি নাম দেয়া হলেও সেগুলি বাদ দিয়েছেন কুমারখালী থানার (ওসি তদন্ত) পরিদর্শক সুভ্র প্রকাশ দাস।

নিহতের মা মর্জিনা খাতুনের অভিযোগ বিলকিসকে তার কর্মস্থল শহরের কাটাইখানা মোড়স্থ ল্যাব এইড নামের ক্লিনিকের মালিক ইয়ারুল ইসলাম, তার ভাগ্নে উজ্জল এবং সহকর্মী জসিমসহ একাধিক ব্যক্তি বিভিন্ন সময় কু-প্রস্তাব দিতো। ওইসবে সাড়া না দেয়ায় বিলকিসকে নানা ভাবে হেনস্থা করত তারা।

নিহতের কন্যা কুয়াসা আক্তার ঋতুর অভিযোগ আমার মা’কে দৈহিক ভাবে চরম নির্যাতন করেছিলো ওরা। ওদের সকলের গ্রেফতার ও ফাঁসি চাই।

লাশ প্রত্যক্ষদর্শী(গোসলকারিনী) নিহতের ভাইঝি আমলাপাড়ার বাসিন্দা রইস উদ্দিনের স্ত্রী কাজলী ইয়াসমিন(৪২) বলেন, বিলকিসের শরীর বিশ্রীভাবে ক্ষত বিক্ষত ছিলো। আমি নিশ্চিত একাধিক ব্যক্তি দ্বারা যৌন নির্যাতনের ফলেই শরীরে(গোপনাঙ্গ) ওইসব জখম হয়েছিলো।

এবিষয়ে কুমারখালী থানার পরিদর্শক(তদন্ত) শুভ্র প্রকাশ দাস বলেন, মামলাটি এখনও তদন্তাধীন। এবিষয়ে এমুহুর্তে খুব বেশী কিছু বলার সুযোগ নেই। তবে তদন্তকালে পরিবারের দেয়া অভিযোগের বিষয়গুলিও খতিয়ে দেখা হবে। এজাহার নামীয় আসামীর বাইরেও যদি কারো সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায় তা অবশ্যই তদন্ত প্রতিবেদনের উঠে আসবে।

উল্লেখ্য গত ১৬আগষ্ট বিকেল থেকে নিখোঁজের চারদিন পর ২০আগষ্ট কুমারখালী উপজেলার কাঞ্চনপুর বাঁশের সাঁকো নামক এলাকায় জিকে খাল থেকে ওই ক্লিনিক নার্স কুষ্টিয়া শহরের আমলাপাড়াস্থ রফিকুল ইসলামের স্ত্রী বিলকিস আক্তারের অর্ধগলিত বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিখোঁজের পর কুষ্টিয়া মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরীও করা হয়েছিলো পরিবারের পক্ষ থেকে।

পাঠকের মতামতের জন্য কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়। লেখাটির দায় সম্পূর্ন লেখকের।