এক প্রাণ পুরুষের বিদায়

এনামুল হক রাসেল এনামুল হক রাসেল

সম্পাদক, দ্য বিডি রিপোর্ট ২৪ ডটকম

প্রকাশিত: ৮:৩৯ পূর্বাহ্ণ, আগস্ট ৬, ২০১৯
Spread the love

সায়েদুল আরেফিন: আমি বাবা হারিয়েছি অনেক আগেই। মা ও চলে গেছেন প্রায় ৬ বছর আগে। আমার মা সখ করে তার প্রিয় ছোট বোনের সাথে তার দেবর মানে আমার ছোট চাচার সাথে বিয়ে দিয়েছিলেন। সেই অর্থে আমাদের ছোট চাচা আমাদের শুধু চাচাই নন, ছোট খালুও বটে। আমাদের নিজেদের পৃথিবীর সেই নক্ষত্র আজ খসে পড়েছে চিরতরে।

আমাদের পারিবারিক সংস্কৃতিতে আমরা চাচা, চাচি শব্দটি ব্যবহার করতাম না, এখনো করি না। যেমন (বংশের যে কোন) বড় চাচিকে বড় মা, মেজ চাচিকে মেজ মা, এইভাবে সেজ মা, ছোট মা ইত্যাদি বলে ডাকতাম, এখনো ডাকি। চাচাদেরও একইভাবে চাচাদের ডাকতাম আব্বা বলে। সেই কারণেই আমরা আমাদের ছোট চাচাকে ছোট আব্বা বলে ডাকতাম।

আমার ছোট আব্বা হাজী আবুল কাশেম গত রাত ২ টার দিকে তিনি তাঁর চূড়ান্ত লক্ষ্যের পথে চলে গেছেন। আমরা আর ধরাধামে তাঁকে পাব না। আমাদের ছোট আব্বা (চাচা) হাজী আবুল কাশেম শুধু চাচাই ছিলেন না, ছিলেন বন্ধুর মত। কত স্মৃতির মেঘেরা আজ মনের আকাশে ভারি হয়ে নীচে নেমে এসেছে। ঝাপসা হতে হতে ভারি কুয়াশার মত ঝরে চলেছে খুব নীরবে। কয়দিন আগেই উনি তাঁর নতুন মাকে বলেছিলেন, ‘মাগো তোমাকে দেখতে খুব ইচ্ছে করছে’। তাঁর মায়ের শরীর খারাপ, অপারেশন, ইত্যাদি জটিলতায় যেতে পারেনি। আর দেখা হবে না, মা ছেলের। ঈদের দিনে আমরা দুইবার করে ঈদি নিতাম ছোট আব্বা হাজী আবুল কাশেমের কাছ থেকে। একবার চাচা হিসেবে, আর একবার খালু হিসেবে। ছোট খালার কাছেও তাই। একবার খালা হিসেবে আর একবার চাচি হিসেবে।

হাজী আবুল কাশেম ছিলেন যুব চেতনা বুঝা মানুষ। তিনি সব সময় আমাদের মনের কথা বুঝে বাবা, চাচাদের হাত থেকে আমাদের রক্ষা করতেন। খুব আধুনিক, আমুদে আর রসিক মানুষ ছিলেন হাজী আবুল কাশেম। একজনমে যতটুকু সফল হওয়া সম্ভব, তাঁর চেষ্টা তিনি করেছেন। আপনারা তাঁকে মরহুম বলতেই পারেন, সেটা আপনাদের অধিকার কিন্তু আমার, আমাদের অনেকের হৃদয়ে তিনি মহান যোদ্ধা আমাদের হৃদয়ে জাগরূক এক কৌশলী গোষ্ঠী প্রেমিক মানুষ। তাই হাজী আবুল কাশেম আমার কাছে কখনোই মরহুম হবেন না। কেন, সে কথা আরেকদিন বলা যাবে।

আজ মঙ্গবার বিকেল ৪টার পরে গ্রামের বাড়িতে তাঁর নামাজে জানাজার আয়োজন করা হয়েছে। তবে মানি আর নাই মানি ইহ জগত থেকে হাজী আবুল কাশেম হারিয়ে গেলেন। তাঁর জন্য আপনাদের শুভ কামনা প্রত্যাশা আমি করতেই পারি। কারণ এটা আমাদের পরিবারের অন্যতম প্রাণ পুরুষের চির বিদায়।

সায়েদুল আরেফিন এর ফেসবুক স্ট্যাটাস থেকে নেওয়া

পাঠকের মতামতের জন্য কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়। লেখাটির দায় সম্পূর্ন লেখকের।